মার্কিন শুল্কারোপের আদ্যোপান্ত: সর্বোচ্চ সিরিয়ায়, সবচেয়ে কম ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে

0


‎আন্তর্জাতিক | 1st August, 2025 11:32 am


‎যুক্তরাষ্ট্রের নির্ধারিত নতুন শুল্কনীতিতে প্রবেশ করলো বিশ্ব। এরইমাঝে, শুল্কারোপিত দেশগুলোর পণ্য রফতানিতে কত বেশি অর্থ গুনতে হবে তার হিসাব প্রকাশ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। সবচেয়ে বেশি, ৪১ শতাংশ সিরিয়ায় আর সবচেয়ে কম, ১০-১৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারিত হয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলোয়। তবে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তে নাখোশ বৈশ্বিক ব্যবসায়ীরা, চিন্তিত সাধারণ মানুষ।


‎শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি কার্যকর হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। কোন দেশের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রফতানিতে কত শতাংশ শুল্ক দিতে হবে এরই মধ্যে ঘোষণা করেছে ওয়াশিংটন।


‎ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। অন্যদিকে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর উপর এই হার ১০-১৫ শতাংশ।

‎এরইমাঝে ট্রাম্পের এ পদক্ষেপ চিন্তার ভাঁজ ফেলছে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের কপালে। রপ্তানীকৃত কাচামালের দাম বাড়লে বিশ্বব্যাপী বাড়বে পণ্যের উৎপাদন খরচ। ফলে বেড়ে যাবে শুল্কারোপিত সকল পণ্যের দাম। যা বিশ্ব অর্থনীতিতে সৃষ্টি করবে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা, আশঙ্কা করছেন অনেকে।




‎দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের ওপর ১৯ শতাংশ, ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, থাইল্যান্ডের ওপর ১৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, ফিলিপাইনের ওপর ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।


‎এক জাপানি নাগরিকের মতে, জাপানের উপর কার্যকর করা শুল্কের হার ১৫ শতাংশ যা অত্যন্ত বেশি। তাই বানিজ্যিকভাবে জাপানের সাথে মার্কিন সম্পর্কের সম্ভাবনা নিয়ে আমি ততটা আশাবাদী নই।


‎এক ভারতীয় বলেন, আমরা আশা করেছিলাম ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের পরিমাণ আরো কম হবে । এমনটি হলে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ-চীনের সাথে প্রতিযোগিতায় সুবিধা হতো। বাণিজ্যিকভাবে ভিয়েতনামের সমপর্যায়ে চলে আসার সম্ভাবনা ছিল আমাদের।



‎এদিকে, মাত্রাতিরিক্ত শুল্কারোপে চটেছে বহু দেশ। জানিয়েছে, সেসব দেশের পণ্য কিনতেও অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।


‎ব্রাজিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরাল্ডো অ্যাল্কমিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানীকৃত ১০টি পণ্যের মধ্যে ৮টিতেই কোনোরকম কর আরোপ করে না ব্রাজিল। তাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের উপরও বাড়তি শুল্কারোপে বাধ্য হবো আমরা।


‎জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্তজের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের যেরকম সম্পর্ক ছিলো, তার প্রেক্ষিতে এরচেয়ে বেশি কিছু আশা করা সম্ভবও ছিলো না। তবে এই শুল্কের সিদ্ধান্তে জার্মানির অর্থনীতি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই ফলাফলে আমি সন্তুষ্ট নই।

‎উল্লেখ্য, বিশ্বকে আরও একটি মহামন্দার দিকে নিয়ে যাবে ট্রাম্পের শুল্কনীতি। আশঙ্কা জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বা আইসিসি। বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা, মুদ্রাস্ফীতি ও মার্কিন শুল্কারোপের জবাবে অন্যান্য দেশের পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ উসকে দিতে পারে বিশাল এক বানিজ্যযুদ্ধ বলে শঙ্কিত বিশ্ববাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *