রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি মামুন কি ক্ষমা পেতে পারেন?

0

আইন ও বিচার | 10th July, 2025 5:27 pm

‎জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেছে।

‎আজ আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। আদালত তার আবেদন মঞ্জুরও করেছেন।

‎আদালতে পুলিশের সাবেক এ প্রধান বলেন, মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত আমার জ্ঞানের মধ্যে থাকা সমস্ত পরিস্থিতির বিস্তারিত ও সত্য ঘটনা স্বেচ্ছায় প্রকাশ করতে ইচ্ছুক। জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিস্তারিত বিবরণ আমি আদালতে তুলে ধরতে চাই। রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাই।
‎কোনো আসামি দায় স্বীকার করে এ ধরনের স্বীকারোক্তি দিলে তাকে রাজসাক্ষী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেই হিসেবে সাবেক আইজিপিকে এ মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে ধরা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
‎তিনি বলেন, সাবেক এই আইজিপি তার দোষ স্বীকার করেছেন এবং তিনি বলেছেন জুলাই-আগস্টে হওয়া হত্যাকাণ্ডের রাজসাক্ষী হয়ে তিনি আদালতকে সকল তথ্য দিতে চান এবং সত্যতা উদঘাটনে সহায়তা করবেন।

‎রাজসাক্ষী ঘোষণার পর চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আদালতে আবেদন করেন তার আইনজীবী। প্রশ্ন ছিল, সাক্ষ্য দিলে আসামি হিসেবে সাবেক আইজিপি কোনো সুবিধা পাবেন কি না।
‎জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু তিনি রাজসাক্ষী হতে চেয়েছেন সেক্ষেত্রে তার নিরাপত্তার সংকট হতে পারে। তাই তার নিরাপত্তার বিষয়ে আদালত অনুমতি দিয়েছেন।
‎এছাড়া, তার দেয়া তথ্যানুযায়ী যদি সত্য উন্মোচন হয়, সেক্ষেত্রে আদালত তাকে ক্ষমা করতে পারেন বা অন্য যেকোনও আদেশ দিতে পারেন। তবে সেটা সম্পূর্ণভাবে আদালতের ওপর নির্ভর করে।

‎এই মামলার সূচনা বক্তব্যের জন্য আগামী ৩ আগস্ট এবং সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য ৪ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। হত্যা মামলায় গত বছর নভেম্বরে নিম্ন আদালতেও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছিলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
‎অন্যদিকে, আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন জানিয়ে ট্রাইব্যুনালে নিযুক্ত শেখ হাসিনার আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, আদালতে যেসব বক্তব্য দিয়েছি সেগুলো পরবর্তী সময়ে আদালত গ্রহণযোগ্য মনে করলে আমলে নিয়ে বিবেচনা করবে।
‎রাজসাক্ষী হওয়ার এমন ঘটনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নজিরবিহীন একটি ঘটনা। এই প্রথম কোনো মামলার রাজসাক্ষী হলেন সাবেক এ পুলিশ প্রধান। এখন দেখার বিষয় তিনি কী রহস্য আর কী সত্য উন্মোচন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *